|| এখন খবর (Bengali: বেঙ্গল নিউজ) is the first 24X7 online news daily portal - dedicated to entire Bengali speaking region. ||

প্রিন্ট করুন

রাজীব চৌধুরী'র গল্প "ইন্টারভিয়্যু"



ইন্টারভিয়্যু টা এমন এক নির্জন এলাকায় হবে জানা ছিলোনা। যেদিন হাতে ইন্টারভিয়্যু কার্ড এলো সেদিন আমি ঠিকানা না দেখেই লাফালাফি করেছিলাম। এখন দেখি এলাকাটা আমি চিনিই না। আমার সময় পড়েছে ঠিক রাত আটটা। দিনের বেলা হলে ক্ষতি কি ছিল? 

জানা নেই।

আমি বসে আছি একটা প্রায় অন্ধকার ঘরে। একটা টেবিল সামনে। মাথার উপর একটা হলুদ আলোর উৎস। কি আলো সেটা জানিনা। অনেকটা ইন্টারোগেশন রুম বলে মনে হচ্ছে। কেউ একজন পুলিশ এসে আমাকে মারতে শুরু না করলেই হয়।

খট খট শব্দ হচ্ছে।


এটা তো পেন্সিল হিলের আওয়াজ। 

তবে কি মহিলা বসের আন্ডারে চাকরি?

অপূর্ব শব্দটার চেও বেশি কিছু যদি ভাব প্রকাশে ব্যবহৃত হত তাহলে উনি তাই। এত সুন্দরী আমি জীবনে দেখিনি। রুমে ঢুকলেন। কাঁটায় কাঁটায় ঠিক আটটা। 

- কি নাম?
- মনসুর
- পুরো নাম?
- শেখ মনসুর।
- বাড়ি?
- আদাবর।
- এর আগের চাকরি?
- জ্বি গত তিনমাস ধরে বেকার। এর আগে করেছি বুলিয়ানাতে। সেলস ম্যান ছিলাম।
- অনেক পরিশ্রমের কাজ। পারবেন?
- আমি অবশ্যই পারব।
- মুখে বলা যত সোজা করা তত কঠিন।
- কেন? কি এমন কাজ?
- মৃত্যু ঝুঁকি আছে।
- মানে? জঙ্গী সংগঠন নাকি?
- না। আমরা অন্যরকম। পেপারে বিজ্ঞাপনে সবকিছু বলা যায়না।
- কেমন?
- আমি কাউন্টেস মার্গারিটা। আমার ব্যক্তিগত সহচর হতে হবে।
- হ্যাঁ ম্যাডাম আমার তাতে কোন আপত্তি নাই।
- বেতন পাবে পঞ্চাশ হাজার করে। তিনমাস টিকতে পারলেই চাকরি কনফার্ম। এর পর প্রতি মাসে একলাখ টাকা করে পাবে।
- লোভনীয় অফার। কিন্তু আমাকে কাজটা কি সেটা কি একটু বুঝিয়ে দেবেন?


মহিলা চট করে উঠে গেলেন। আমাকে বললেন- আসুন আমার সাথে।
 

আমি হাঁটতে শুরু করতেই একটা গন্ধ নাকে এসে লাগল। নোনতা। আশেপাশে সমুদ্র থাকার তো কথা না।

বিশাল লম্বা একটা করিডোর ধরে মহিলা হেঁটে চলেছে। পেছন পেছন আমি।
অনেকগুলো পুরোনো ছবি। হয়ত রাজা মহারাজা টাইপের কেউ হবে।
 

আমি হাঁটছি।

কাউন্টেস মার্গারিটা যেন সর্পীনি। শরীরে হাটার সময় একটা ঢেউ খেলে। সারা শরীরে বিদেশীদের মতো ব্লেজার ট্রাউজার ছাড়া তেমন কিছু নেই। পুরো গঠনটা মাথা নষ্ট করে দেয়ার মত।

হাঁটতে হাঁটতে মহিলা একটা ঘরের সামনে এসে থেমে গেলে আমিও থামলাম। দরজার নব ঘুরিয়ে আমাকে ইশারা করলেন ঢোকার জন্য।

আর আমি ঢুকতেই নাকে একটা গন্ধ ধাক্কা দিলো সজোরে। এই গন্ধ আমার খুব পরিচিত। এবং আমি সঠিক যায়গাতেই যে চলে এসেছি তা একেবারে নিশ্চিত। মহিলা পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে অনেকের সাথে। ওখানে অনেকগুলো মানুষ ছিল। সবাই ছাদ থেকে ঝুলে আছে উল্টো হয়ে। প্রত্যেকের গলার কাছ থেকে একটা প্লাস্টিকের নল বেয়ে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত গড়িয়ে পড়ছে একটা বড় পাত্রে। সেখান থেকে খানিক পর পর কিছু মানুষ সেই রক্তগুলো নিয়ে যাচ্ছে। বেশ কিছু বয়োবৃদ্ধ ও বৃদ্ধা কিছু সিংহাসনে বসে আছে। ওখানে চরেরা রক্ত নিয়ে যাবার পর পেয়ালা করে পান করছে ওরা। এই লোকগুলো সারাদিন এখানে রক্ত দান করে আটঘন্টা শিফট শেষ করে খানিক পরেই বেড়িয়ে পড়বে। সারারাত ধরে বিভিন্ন ছিন্নমূল মানুষের রক্ত পান করবে। সারাদিন সেই রক্তগুলো ফোঁটায় ফোঁটায় ফেরত দেবে। বেশ পরিশ্রমের কাজ। কিন্তু বেশ 


লাভজনক।

দেখেই আমার চোখ দুটো খুশিতে চকচক করে উঠল।
অবশেষে মনের মত একটা কাজ পেয়েছি। অনেকদিন রাতে বিরাতে রাস্তায় রাস্তায় মানুষ শিকার করে বেড়িয়েছি। এবার সেই একই কাজ করে টুপাইস 

কামানোর ব্যবস্থা ও করে ফেললাম বলেই মনে হচ্ছে।
 

হ্যাঁ- আমি একজন বেকার ভ্যাম্পায়ার। আজকে থেকে চাকরিতে জয়েন করব বলেই আমার আবদ্ধ ধারণা। কাজ হল -রক্ত বিনিময়।


প্রিয় পাঠক, পোস্টটি পড়ার পর আপনার ভালো-লাগা, মন্দ-লাগা, জিজ্ঞাসা কিংবা পরামর্শ প্রদানের জন্য দয়া করে গঠনমূলক মন্তব্য প্রদান করুন। যা আমাদের কে এগিয়ে চলতে অনেক উৎসাহ-অনুপ্রেরণা জাগাবে। আর প্রাসঙ্গিক যেকোন প্রশ্নের সমাধান পেতে মেইল করুন fassionchannel@gmail.com ঠিকানায় অথবা অধিক জরুরী প্রয়োজনে কল করুন +৯৯০৩১৫০৯৯০ নম্বরে। আপনার একটি মন্তব্যই আমাদের নিকট অনেক মূল্যবান। আপনার লেখা গল্প কবিতা পাঠিয়ে দিন আমাদের দপ্তরে sahitto.ekhonkhobor@gmail.com এই ঠিকানায়।সাথেই থাকুন বিশ্ববঙ্গের সর্বাধিক পঠিত ব্যক্তিগত বাংলা নিউজের সাথে। ধন্যবাদান্তে, এখন খবর

No comments:

Post a Comment

পেজ টি এতবার দেখা হয়েছে